কথা ছিল এক তরীতে কেবল তুমি আমি যাব অকারণে ভেসে কেবল ভেসে , ত্রিভুবনে জানবে না কেউ আমরা তীর্থগামী কোথায় যেতেছি কোন দেশে সে কোন দেশে । কুলহারা সেই সমুদ্র -মাঝখানে শোনাব গান একলা তোমার কানে , ঢেউয়ের মতন ভাষা বাঁধন হারা আমার সেই রাগিনী শুনবে নীরব হেসে ।।
আর নাই রে বেলা , নামল ছায়া ধরণীতে এখন চল রে ঘাটে কলসখানি ভরে নিতে । জলধারার কলস্বরে সন্ধ্যাগগন আকুল করে - ওরে ডাকে আমার পথের পরে সেই ধ্বনিতে ।। এখন বিজন পথে করে না কেউ আসা-যাওয়া , ওরে, প্রেম-নদীতে উঠেছে ঢেউ - উতল হাওয়া । জানি নে আর ফিরবো কি না , কার সাথে আজ হবে চিনা - ঘটে সেই অজানা বজায় বীণা তরণীতে । চল রে ঘাটে কলসখানি ভরে নিতে ।।
বিপদে মোরে রক্ষা করো, এ নহে মোর প্রার্থনা - বিপদে আমি না যেন করি ভয় । দুঃখতাপে - ব্যথিত চিতে নাই বা দিলে স্বান্তনা , দুঃখে যেন করিতে পারি জয় । সহায় মোর না যদি জুটে নিজের বল না যেন টুটে - সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি, লভিলে শুধু বঞ্চনা , নিজের মনে না মানি যেন ক্ষয় ।।
সে তো সেদিনের কথা বাক্যহীন যবে এসেছিনু প্রবাসীর মতো এই ভবে বিনা কোনো পরিচয় , রিক্ত শূন্য হাতে , একমাত্র ক্রন্দন সম্বল লয়ে সাথে । আজ সেথা কি করিয়া মানুষের প্রীতি কণ্ঠ হতে টানি লয় যত মোর গীতি । এ ভুবনে মোর চিত্তে অতি অল্প স্থান নিয়েছে ভুবননাথ ! সমস্ত এ প্রাণ সংসারে করেছ পূর্ণ । পদপ্রান্তে তব প্রত্যহ যে ছন্দে-বাঁধা গীত নব নব
সব ঠাঁই মোর ঘর আছে , আমি সেই ঘর মরি খুঁজিয়া। দেশে দেশে মোর দেশ আছে , আমি সেই দেশ লব যুঝিয়া। পরবাসী আমি যে দুয়ারে চাই - তারি মাঝে মোর আছে যেন ঠাঁই , কোথা দিয়া সেথা প্রবেশিতে পাই সন্ধান লব বুঝিয়া । ঘরে ঘরে আছে পরমাত্মীয়, তারে আমি ফিরি খুঁজিয়া ।।
কথা কও , কথা কও , অনাদি অতীত, অনন্ত রাতে কেন বসে চেয়ে রও ? কথা কও , কথা কও । যুগযুগান্ত ঢালে তার কথা তোমার সাগরতলে , কত জীবনের কত ধারা এসে মিশায় তোমার জলে । যেথা এসে তার স্রোত নাহি আর , কলকল ভাষ নীরব তাহার - তরঙ্গহীন ভীষণ মৌন, তুমি টরে কোথা যে লও ? হে অতীত, তুমি হৃদয়ে আমার কথা কও , কথা কও ।।