Rakhal chele - poem by Jasimuddin - রাখাল ছেলে - পল্লীকবি জসিমউদ্দিন এর কবিতা

বাংলা সাহিত্যের জগতে পল্লীকবি নামে পরিচিত কবি জসিমউদ্দিন এর খুব সুন্দর একটি কবিতা রাখাল ছেলে । কবিতাটি আমাদের স্কুল এ পড়ার সময় পাঠ্যপুস্তকে সন্নিহিত ছিল । কবিতাটির বিষয়বস্তু একটি রাখাল ছেলের সঙ্গে এক গ্রাম্য প্রকৃতির এক মধুর সম্পর্কের। আশাকরি কবিতাটি আপনারা উপভোগ করবেন। 



'রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! বারেক ফিরে চাও 
বাঁকা গাঁয়ের পথটি বেয়ে কোথায় চলে যাও ? '

'ওই যে নীল - নোয়ানো সবুজ ঘেরা গাঁ 
কলার পাতায় দোয়ায় চামার শিশির ধোয়ায় পা ;
সেথায় আছে ছোট্ট কুটির  সোনার পাতায় ছাওয়া ,
সেই ঘরেতে একলা বসে  ডাকছে আমার মা 
সেথায় যাবো, ওভাই এবার আমায় ছাড় না !'

'রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! আবার কোথা ধাও,
পুব আকাশে ছাড়লো সবে রঙীন মেঘের নাও। '

'ঘুম হতে আজ জেগেই দেখি শিশির ভেজা ঘাসে ,
সারা রাতের স্বপন আমার মিঠেল  হাসে। 
আমার সাথে করতে খেলা প্রভাত হাওয়া ভাই 
সরষে ফুলের পাপড়ি নেড়ে ডাকছে  তাই। 
চলতে পথে মটরশুঁটি জড়িয়ে ধরে পা 
বলছে ডেকে, 'গায়ের রাখাল  একটু খেলে যা !' 
সারা মাঠের ডাক এসেছে খেলতে হবে ভাই !
সাঁঝের বেলা কইব কথা এখন তবে যাই !'

'রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! সারাটা দিন খেলা ,
এযে বড় বাড়াবাড়ি কাজ আছে যে মেলা !

'কাজের কথা জানিনে ভাই লাঙ্গল দিয়ে খেলি 
নিড়িয়ে দেই ধানের ক্ষেতের সবুজ রঙের চেলি 
সরষে বালা নুইয়ে গলা হলদে হওয়ার সুখে 
মটর বোনে ঘোমটা খুলে চুম দিয়ে যায় মুখে !
ঝাউয়ের ঝাড়ে বাজায় বাঁশি পউষ-পাগল বুড়ি,
আমরা সেথা চষতে লাঙ্গল মুর্শিদা-গান জুড়ি। 
খেলা মোদের গান গাওয়া ভাই, খেলা লাঙল চষা 
সারাটা দিন খেলতে জানি , জানিই নেকো বসা। '

No comments:

Post a Comment